সামাজিকীকরণের বিভিন্ন উপাদান, বিভিন্ন মাধ্যম এবং পিতা মাতা ও গৃহ পরিবেশের ভূমিকা।
সামাজিকীকরণের বিভিন্ন উপাদান, বিভিন্ন মাধ্যম এবং পিতা মাতা ও গৃহ পরিবেশের ভূমিকা।
সামাজিকীকরণের বিভিন্ন উপাদান :একটি স্বাভাবিক এবং সুস্থ সমাজজীবন অতিবাহিত করার জন্য জন্মের পর থেকে শিশু প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তার সমাজজীবনের রীতিনীতি, আচার-ব্যবহার প্রভৃতি আয়ত্ত করতে বাধ্য থাকে, যেগুলি সে তার পিতা-মাতা, পরিবারের অন্যান্য সদস্য বা সমাজের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের কাছ থেকে শেখে। এই প্রক্রিয়ার আবার চারটি উপাদান রয়েছে।
যেমন- a অনুকরণ (Imitation), bঅভিভাবন (Suggestion), c অঙ্গীভূতকরণ বা শনাক্তকরণ (Identification).dভাষা (Language)।
সামাজিকীকরণের মাধ্যম :
সামাজিকীকরণের মুখ্য বা প্রত্যক্ষ সংস্থা এবং গৌণ বা অপ্রত্যক্ষ সংস্থা এই দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
মুখ্য বা প্রত্যক্ষ সংস্থা :পরিবার
গৌণ বা অপ্রত্যক্ষ সংস্থা :
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
বন্ধু দল বা সহপাঠী
গণমাধ্যম
জন সম্প্রদায়
ধর্মীয় সংস্থা
পেশাগত সংগঠন
সামাজিকীকরণে পিতা-মাতা বা গৃহ পরিবেশের ভূমিকা :সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে পিতা-মাতা ও অন্যান্য নিকট আত্মীয়দের নিয়ে গঠিত পরিবার শিশুর সামাজিকীকরণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পরিবারের মধ্য থেকেই শিশু সামাজিক নীতিবোধ নাগরিক চেতনা সহযোগিতা সহিষ্ণুতা সম্প্রীতি ভালোবাসা আত্মত্যাগ বন্ধুত্ব সবকিছুই অর্জন করে। তবে গবেষকরা দেখেছেন পরিবারের মধ্যে পিতা-মাতার দ্বারা শিশুরা বেশি প্রভাবিত হয়।
শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য:
গৃহ পরিবেশ এমন হওয়া দরকার যেখানে শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য অক্ষুণ্ণ থাকে ও শিশুর ন্যূনতম বস্তুগত প্রয়োজনগুলি মেটানো সম্ভব হয়।
শিশুর অনুকরণে সহায়তা:
শিশুরা পিতা-মাতা ওপরিবারের অন্যান্য বড়ো সদস্যদের আচার-ব্যবহার অনুকরণ করে। তাই গৃহপরিবেশে শিশুদের উপস্থিতিতে বয়স্কদের আচরণে শৃঙ্খলা, সামঞ্জস্য ও নৈতিক আদর্শের প্রতিফলন ঘটাতে হয়।
সামাজিক রীতিনীতি সম্পর্কে অবগত করা:
পিতা-মাতার উচিত শিশুদের বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, যেমন-বিয়েবাড়ি, উৎসব, পুজোপার্বণে নিয়ে গিয়ে গৃহের বাইরের সামাজিক রীতিনীতি ও আচার-ব্যবহারের সঙ্গে পরিচয় ঘটিয়ে সেগুলির সঙ্গে তাদের অভ্যস্ত করা।
সুঅভ্যাস গঠন করা:
সঠিক খাদ্যাভ্যাস, মার্জিত পোশাক-পরিচ্ছদ পরার অভ্যাস, অপরের প্রতি ভদ্র ব্যবহার, বয়স্ক ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা জানানো প্রভৃতি সুস্থ অভ্যাস পিতা-মাতাই শিশুদের শেখাতে পারেন।
পারস্পরিক সৌহার্দ্যবোধ জাগানো :
পিতা-মাতা শিশুদের সামাজিক জীব হিসেবে দলবদ্ধভাবে খেলাধুলা বা বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম করতে উৎসাহিত করেন। যার মাধ্যমে পারস্পরিক সহযোগিতা, বন্ধুত্ব প্রভৃতি সামাজিক বৈশিষ্ট্যের উন্মেষ ঘটে।
Comments
Post a Comment