স্বামী বিবেকানন্দের সামাজিক ন্যায় সম্পর্কে ধারণার সংক্ষিপ্ত মূল্যায়ন করুন।
স্বামী বিবেকানন্দের সামাজিক ন্যায়:
বিবেকানন্দ ছিলেন মানবপ্রেমী। তিনি স্বাধীনতা, সাম্য ও ন্যায়ের বিষয়টিকে মানব বিকাশের ক্ষেত্রে এবং আদর্শ মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্যে গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করেছিলেন। তার চিন্তাধারা অনুযায়ী সামাজিক ন্যায় হলো -
[১]মানুষের সার্বিক উন্নতি ও আত্মিক মুক্তি :
বিবেকানন্দের সকল চিন্তনের কেন্দ্রবিন্দু ছিল মানুষ। মানব মুক্তির অগ্রদূত হিসেবে তার একমাত্র ধ্যান-জ্ঞানই ছিল মানুষের সামগ্রিক উন্নতি ও আত্মিক মুক্তি। বস্তুত ভারতের বিভিন্ন স্থানে পরিভ্রমণ কালে বিবেকানন্দ সমাজের প্রকৃত স্বরূপ এবং জনজীবনে সামাজিক ন্যায়ের বাস্তব চিত্র প্রত্যক্ষ করে আর্ত, পীড়িত ও শোষিত মানুষের মুক্তির পথ অন্বেষণে ব্রতী হন।
[২]নব্য ভারত গঠনের চিন্তা :
দরিদ্র ও শোষিত মানুষের সঙ্গে বিবেকানন্দ একাত্ম ছিলেন কারণ সৃষ্টির আদিকাল থেকেই এরা অন্যায় অবিচারের শিকার। সমগ্র দেশজুড়ে তিনি যে দারিদ্র্য দেখেছেন তা অতীত গৌরবের প্রতি গর্ববোধকে আঘাত করেছিলো। এই কারণে তিনি এমন এক ভারতের কথা ভেবেছেন যে ভারত হবে অন্যায়, অসাম্য অবিচারের নাকপাশ থেকে মুক্ত। তিনি এমন এক ভারতের কথা ভেবেছেন, যে ভারত ".......লাঙ্গল ধরে, চাষার কুটির ভেদ করে, জেলে-মালা-মুচি-মেথরের ঝুপড়ির মধ্যে থেকে " জন্ম নেবে।
[৩] সামাজিক ন্যায়ের পুনঃপ্রতিষ্ঠা :
একজন সমাজবিদের দৃষ্টিভঙ্গিতেই বিবেকানন্দ সামাজিক অন্যায় অবিচার এবং দারিদ্র পীড়িত মানুষের বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে সচেতন হয়ে উপলব্ধি করেছিলেন যে, মানুষের দুঃখ -কষ্ট, দারিদ্র্য সবই সামাজিক ন্যায়ের অভাব থেকেই সৃষ্ট, তা ভাগ্যের অভিশাপ নয়।তাই তিনি ভারতে সামাজিক ন্যায়ের পুন:প্রতিষ্ঠায় ছিলেন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
Comments
Post a Comment