ভৌগোলিক অভিযানে ভাস্কোদাগামা ও বারথেলো মিউজিয়াদের ভূমিকা আলোচনা কর

 ভৌগোলিক অভিযানে ভাস্কোদাগামা ও বারথেলো মিউজিয়াদের ভূমিকা আলোচনা কর

ভৌগোলিক অভিযানে ভাস্কোদাগামা ও বার্থেলোমিউ ডিয়াজ-এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। নিচে তাদের ভূমিকা আলোচনা করা হলো:

ভৌগোলিক অভিযানে ভাস্কোদাগামার ভূমিকা 

ভাস্কো দা গামা ছিলেন একজন পর্তুগিজ নাবিক, যিনি ইউরোপ থেকে সমুদ্রপথে ভারতে পৌঁছানো প্রথম ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। ১৪৯৭ সালের ৮ জুলাই পর্তুগালের লিসবন থেকে যাত্রা শুরু করে, তিনি ১৪৯৮ সালের ২০ মে ভারতের কালিকট বন্দরে পৌঁছান। তার এই অভিযান বিশ্ব ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়, যা ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের পথ খুলে দেয়।

ভাস্কো দা গামার অভিযান:

  • যাত্রা শুরু: ১৪৯৭ সালের ৮ জুলাই, ভাস্কো দা গামা চারটি জাহাজ নিয়ে লিসবন থেকে যাত্রা শুরু করেন।©shikshakuthir
  • আফ্রিকা অতিক্রম: তিনি আফ্রিকার পশ্চিম উপকূল ধরে যাত্রা করে কেপ অফ গুড হোপ অতিক্রম করেন।
  • পূর্ব আফ্রিকা: পূর্ব আফ্রিকার মোজাম্বিক ও মালিন্দিতে তিনি স্থানীয় শাসকদের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং একজন অভিজ্ঞ নাবিকের সাহায্য লাভ করেন।©shikshakuthir
  • ভারতে আগমন: ১৪৯৮ সালের ২০ মে, ভাস্কো দা গামা ভারতের কালিকট বন্দরে পৌঁছান।
  • কালিকাটে অবস্থান: কালিকটের হিন্দু রাজা জামোরিনের সাথে তার সাক্ষাৎ হয়, কিন্তু বাণিজ্যিক চুক্তি নিয়ে তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়।©shikshakuthir
  • পর্তুগালে প্রত্যাবর্তন: ১৪৯৯ সালে তিনি পর্তুগালে ফিরে যান।

অভিযানের গুরুত্ব:

  • নতুন সমুদ্রপথ: ভাস্কো দা গামার অভিযান ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে একটি নতুন সমুদ্রপথের সন্ধান দেয়।
  • বাণিজ্যিক সম্পর্ক: এই অভিযানের ফলে ইউরোপ ও ভারতের মধ্যে সরাসরি বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।©shikshakuthir
  • ঔপনিবেশিকতাবাদ: ভাস্কো দা গামার অভিযানের মাধ্যমে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিকতাবাদের সূচনা হয়।
  • বিশ্ব ইতিহাস: তার এই সমুদ্র যাত্রা বিশ্ব ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসাবে বিবেচিত হয়।

ভৌগোলিক অভিযানে  বারথেলো মিউজিয়াদের ভূমিকা 

বার্থেলোমিউ ডিয়াজ (Bartholomew Diaz) ছিলেন একজন পর্তুগিজ নাবিক যিনি ১৪৮৮ সালে আফ্রিকার দক্ষিণতম প্রান্তে পৌঁছান এবং কেপ অফ গুড হোপ (Cape of Good Hope) আবিষ্কার করেন। তার এই অভিযান ভৌগোলিক আবিষ্কারের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।

বার্থেলোমিউ ডিয়াজের অভিযানের প্রেক্ষাপট:

  • পর্তুগালের রাজা দ্বিতীয় জন (John II) প্রাচ্যের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য একটি সমুদ্রপথ খুঁজে বের করতে আগ্রহী ছিলেন।
  • এই উদ্দেশ্যে, তিনি বার্থেলোমিউ ডিয়াজকে একটি অভিযান পরিচালনার দায়িত্ব দেন।

বার্থেলোমিউ ডিয়াজের অভিযান:

  • ১৪৮৭ সালের আগস্ট মাসে, বার্থেলোমিউ ডিয়াজ তিনটি জাহাজ নিয়ে লিসবন থেকে যাত্রা শুরু করেন।
  • তিনি আফ্রিকার পশ্চিম উপকূল ধরে দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হন।©shikshakuthir
  • ১৪৮৮ সালের জানুয়ারি মাসে, একটি প্রবল ঝড়ের কারণে তার জাহাজগুলো দক্ষিণ আফ্রিকার দক্ষিণতম প্রান্তে পৌঁছাতে বাধ্য হয়।
  • ঝড় থামার পর, ডিয়াজ দেখেন যে তিনি আফ্রিকার দক্ষিণতম প্রান্তে পৌঁছে গেছেন। তিনি এই স্থানের নাম দেন "কেপ অফ গুড হোপ" (Cape of Good Hope)।
  • তিনি আরও কিছুদূর পূর্ব দিকে অগ্রসর হন, কিন্তু তার নাবিকরা ক্লান্ত হয়ে পড়ায় এবং খাদ্য ও রসদের অভাবে তাকে ফিরে যেতে বাধ্য হন।
  • ১৪৮৮ সালের ডিসেম্বর মাসে, তিনি লিসবনে ফিরে আসেন।©shikshakuthir

বার্থেলোমিউ ডিয়াজের অভিযানের গুরুত্ব:

  • বার্থেলোমিউ ডিয়াজের অভিযান প্রমাণ করে যে আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণতম প্রান্তে পৌঁছানো সম্ভব।
  • তার আবিষ্কার ইউরোপীয়দের জন্য প্রাচ্যের দিকে একটি নতুন সমুদ্রপথের সন্ধান দেয়।
  • এই অভিযান ভাস্কো দা গামার ভারত অভিযানের পথ প্রশস্ত করে।

বার্থেলোমিউ ডিয়াজের এই অভিযান ভৌগোলিক আবিষ্কারের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসাবে বিবেচিত হয়।©shikshakuthir

Comments

Popular posts from this blog

ডেভিড স্টনের ব্যবস্থাপক তত্ত্বটি সংক্ষেপে আলোচনা কর।

Write down the techniques for effective reading and the reading strategies that are useful.

প্রাচীন অনুবর্তনের বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো। শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাচীন অনুবর্তন প্রতিক্রিয়ার ব্যবহার লেখো।Nature/Characteristics of Classical Conditioning . Educational implications of Classical Conditioning.